বিজ্ঞাপণের জন্য যোগাযোগ করুন- 01966555312

আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, ন্যায়বিচার যাতে বিলম্বিত না হয়: প্রধান বিচারপতি

শরীয়তপুরটাইমস্ ডেস্ক:
প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার ও পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে আইনি সহায়তায় বিচারিক কার্যক্রম আরও সহজ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেছেন, ‘আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, ন্যায়বিচার যাতে বিলম্বিত না হয়।

‘বিচারিক স্বাধীনতা ও দক্ষতা’ শীর্ষক এক কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধান বিচারপতি এ কথা বলেন। রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আজ শনিবার এ কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের সভাপতিত্বে ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ, নিম্ন আদালতের বিচারকেরা  কনফারেন্সে অংশ নেন।

১৯৭১ সালের শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘যাদের আত্মত্যাগ আমাদের স্বাধীন জাতির ভিত্তিস্থাপন করেছিল। বিজয়ের এই মাস ডিসেম্বর, তাদের অতুলনীয় সাহস এবং উৎসর্গের একটি শক্তিশালী অনুস্মারক হিসেবে কাজ করে।’

২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিপ্লবের দৃঢ় চেতনাকে স্মরণ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, জুলাই বিপ্লব নিপীড়নকে উৎখাত এবং ন্যায়বিচার, সাম্য এবং মানবতা পুনরুদ্ধারের লড়াই। প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের ইতিহাসের এই সংজ্ঞায়িত মুহূর্তগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, ন্যায়বিচারের সন্ধান একটি ক্ষণস্থায়ী প্রচেষ্টা নয় বরং একটি আজীবন প্রতিশ্রুতি যা আমাদের বিচারিক মিশনের ভিত্তি তৈরি করে।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘সম্প্রতি একজন বিচারপ্রার্থী আপিল বিভাগ বেঞ্চের কাছে যান। ওই বিচারপ্রার্থী কাঁপাকণ্ঠে কথা বললেন। কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিলম্বিত বিচারের কারণে ওই বিচারপ্রার্থী তার দুর্দশা কথা তুলে ধরেন। তার কষ্ট দেখে আমি তাকে আশ্বস্ত করেছিলাম যে আগামী মাসে তাঁর মামলার শুনানি হবে। তাঁর আন্তরিক কৃতজ্ঞতা আমাকে মনে করিয়ে দিয়েছে যে, বিচারে বিলম্ব হ্রাস করা নিছক প্রশাসনিক লক্ষ্য নয়, বরং এটি নৈতিক বাধ্যতামূলক।’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, ন্যায়বিচার যাতে বিলম্বিত না হয়।’

দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিয়েই নিজের বিশাল দায়িত্ব সম্পর্কে তীব্রভাবে সচেতন ছিলেন বলে উল্লেখ করেন সৈয়দ রেফাত আহমেদ। তিনি বলেন, বিচার বিভাগের ওপরে গৌরবপূর্ণ আস্থা, সবার জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে শক্তিশালী করার জন্য আমার দৃঢ় প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে, আমি ক্ষমতার সত্যিকারের পৃথক্‌করণের ভিত্তিস্থাপনের জন্য সিদ্ধান্তমূলক পদক্ষেপ নিয়েছি। আমি বিচার বিভাগের জন্য একটি পৃথক সচিবালয় তৈরির প্রক্রিয়া ঘোষণা করেছি এবং শুরু করেছি, যা বিচার বিভাগের প্রশাসনিক স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’ তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা এবং যোগ্যতা প্রাতিষ্ঠানিকীকরণের জন্য একটি বিচার বিভাগীয় নিয়োগ কাউন্সিল গঠনে সরকারের কাছে তিনি প্রস্তাব করেছেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আদালতের কার্যক্রমকে আরও দক্ষ ও স্বচ্ছ করতে প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। ডিজিটালাইজেশন আর বিলাসিতা নয়; এটি একটি প্রয়োজনীয়তা। আধুনিক সরঞ্জাম এবং প্রযুক্তিকে একীভূত করার মাধ্যমে, বিলম্ব কমাতে, স্বচ্ছতা বাড়াতে এবং মামলাকারীদের আরও নির্বিঘ্ন সেবা প্রদানে আমরা বদ্ধ পরিকর।’

Post a Comment

Thnaks For Comment

Previous Post Next Post