নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুরি ডাকাতি সহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে আড়াই বছর আগে পুলিশের কনস্টেবল পদ থেকে চাকরিচ্যুত হন শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের চরমালগাও গ্রামের মোশাররফ বেপারীর ছেলে উজ্জ্বল বেপারী(৩০)। চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার পরও তার অপকর্ম থামেনি।
এলাকায় চুরি ডাকাতি, নারীদের উত্যক্তসহ এমন কোন অপকর্ম নেই যা করছেন না উজ্জল। তার বিরুদ্ধে ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশও খুঁজছে তাকে।
গত ২৬ ডিসেম্বর ভোরে চরমালগাও বিশ্বাসবাড়িতে আরজু বেগম নামে এক বৃদ্ধা মহিলা টয়লেটে গেলে সেখানে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা বখাটে উজ্জ্বল বৃদ্ধা মহিলার গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ছিনতাই করে দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে এ নিয়ে আরজু বেগমের ভাইয়ের ছেলে আব্দুর রশিদ বেপারি জিজ্ঞাসা করতে গেলে তার মাথায় ধারালো রামদা দিয়ে কোপ মারে বখাটে উজ্জ্বল। এ ঘটনায় উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে ডামুড্যা থানায় মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী আব্দুর রশিদ বেপারি।
গত শনিবার চরমালগাও গ্রামে গিয়ে জানা যায় উজ্জ্বলের অপকর্মের নানা ঘটনা। এসময় এলাকাবাসী মোবাইল ফোনে তার কয়েকটি অপকর্মের ভিডিও দেখান। ভিডিওতে দেখা যায়, ঢাকার মতিঝিলে পুলিশের পোশাক পড়া অবস্থায় চুরি করে ধরা পড়ে উত্তেজিত জনতার গণপিটুনি খায় উজ্জল। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, ডামুড্যা এলাকায় এক প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে পরকিয়া করতে গিয়ে ধরা খেলে এলাকাবাসী তাকে একটি গাছের সাথে বেধে মারধর করছে।
চরমালগাও গ্রামের আরজু বেগম বলেন, আমি ভোরে টয়লেটে যাওয়ার জন্য ঘর থেকে বের হলে বখাটে উজ্জ্বল আমার গলা থেকে স্বর্ণের চেইন ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
অনুফা বেগম বলেন, আমাদের বাড়ির পুরুষ মানুষ বিদেশে থাকে। আমরা মহিলারা বাড়ি থাকি। উজ্জ্বল প্রায়ই বাড়ির মহিলাদের উত্যক্ত করে। আমার কাছে আমার জালের নাম্বার চায়। রাত বিরাতে জানালা দিয়ে উঁকি মারে। তখন আমরা ভয় পেয়ে যাই।
রিজিয়া বেগম নামে আরেক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, উজ্জল একটা বদমাশ পোলা। তার জ্বালায় এলাকার বউ-জি শান্তিতে বাড়িতে থাকতে পারেনা।
স্থানীয় বাসিন্দা মোতালেব বিশ্বাস বলেন, এমন কোন অপকর্ম নাই যেটা উজ্জ্বল করেনা। সে পুলিশে চাকরি থাকাবস্থায় ডাকাতি করতে গিয়ে ধরা খেয়ে গণধোলাই খেয়েছে। নানা অপকর্মের কারণে সে পুলিশের চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছে। তারপরও সে অপকর্ম ছাড়েনি।
ভুক্তভোগী আব্দুর রশিদ বেপারি বলেন, আমার ফুফুর স্বর্ণের চেইন ছিনতাইয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে উজ্জ্বল আমার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এতে আমার মাথা গুরুতর জখম হয়। আমি অনেকদিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। এ ঘটনায় আমি থানায় মামলা দায়ের করেছি। আমি তার উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য উজ্জ্বল বেপারীর বাড়ি গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার দাদা মকদম বেপারীর কাছে উজ্জ্বলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, উজ্জ্বল কোথায় আছে আমি জানিনা। ও মাঝেমধ্যে বাড়ি আসে। এলাকায় যে ঘটনা ঘটেছে তার মীমাংসা চেষ্টা চলতেছে, যদি বাড়াবাড়ি করে তাহলে খুন খারাপি হবে ।
উজ্জ্বলের ছোট ভাই সজল বেপারী বলেন, আমার ভাই উজ্জ্বলের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যা, উদ্দ্যেশ্য প্রনোদিত। সে কোন অপরাধের সাথে জড়িত নয়।
ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) হাফিজুর রহমান মানিক বলেন, উজ্জ্বল বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। গ্রেফতারের জন্য আমরা তাকে খুঁজতেছি।