শরীয়তপুর টাইমস্ ডেস্ক :
শরীয়তপুরের জাজিরায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গত ১৭ জুলাই দুপুরে পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা এলাকায় একটি বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করেন ছাত্রছাত্রীরা। সেসময় সেখানে অবস্থান নেয় স্থানীয় ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগ নেতারা। পরে সেখান থেকে ছাত্রছাত্রীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দিলে ছাত্ররা পদ্মাসেতু গোল চত্বর এলাকায় অবস্থান নিলে এক পর্যায়ে ছাত্রছাত্রীদের উপরে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে  ঝাপিয়ে পরে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। 

বুধবার (২১ আগস্ট) দুপুরে পদ্মা সেতু দক্ষিন এলাকার জমাদ্দার মোড় গোল চত্বর এলাকায় দুপক্ষের  মধ্যে একটি বৈঠক হয়।  এসময় সেখানে আবেগময় একটি পরিবেশের সৃষ্টি হলে সেখানে হামলাকারীদের সাধারণ ছাত্রা ক্ষমা করে দেয়। 

সেখানে দেখা যায়, আহত ছাত্ররা ঘটনাস্থলে যাওয়ার সাথে সাথে হামলার সাথে জড়িত ব্যক্তিরা সকলে তাদের কৃতকর্মের কথা উল্লেখ্য করে অনুতপ্ত হয় এবং একে একে আহত সকলের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করেন। সেসময় ছাত্ররাও তাদের ক্ষমা করেছেন বলে আশ্বস্ত করেন।

জানা যায়,  গত ৫ আগস্ট আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর সেখানে কয়েক দফায় হামলাকারীদের বিচারের দাবীতে বিভিন্ন কর্মসূচীর আয়োজন করেন ছাত্রছাত্রীরা। সেসময় ছাত্ররা ঐ হামলায় আহত হয়েছিল। তারা বিষয়টি নিয়ে কোন মামলা বা আইনী প্রক্রিয়ায় যেতে চাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন।

বিষয়টি নিয়ে কথা হয় এলাকার সাধারণ জনগনের সাথে। তারা প্রতিবেদককে জানায় ক্ষমা একটি মহৎ গুন। সাধারণ ছাত্ররা একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত উপস্থাপন করলো। এই যুগে কেউ কাউকে ক্ষমা করেনা। আঘাত পেলে আঘাত দেওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু ছাত্ররা যা করলো তার প্রশংসা করে শেষ করা যাবেনা। 

কথা হয় হামলার সাথে জড়িত ফরহাদ আকনের সাথে। তিনি বলেন, "আমরা ছাত্রদের সাথে যা করেছি তা ভুল করেছি। তা নিয়ে আমরা অনুতপ্ত। আমরা আর কখনোই দলীয় বা নিজেদের স্বার্থে একধরণের সহিংসতায় জড়িত হবোনা বলে প্রতিজ্ঞা করেছি। ছাত্ররা আমাদের নিজগুণে ক্ষমা করেছেন তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।"

হামলার শিকার আহমেদ আল-ইসলাম বলেন, "আন্দোলনের অংশ হিসেবে পদ্মা সেতু এলাকায় বিক্ষোভ কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেছিলাম। সারাদেশের মত আমাদের উপর ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের লোকজন হামলা করেছিল। তবে হামলায় আমরা তেমন বেশি  ক্ষতিগ্রস্ত হইনি। সবদিকে চিন্তা করে ও আমরা আন্দোলনে যুক্ত থাকা ছাত্ররা আলোচনা করে হামলাকারীদের শুধরানোর আল্টিমেটাম দিয়ে ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত নেই।" 

তিনি আরো বলেন, "আমরা আন্দোলন করেছি একটি সুশৃঙ্খল বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় যেহেতু হামলাকারীরা তাদের নিজেদের ভুল বুঝতে পেরেছে। তাই তাদের নিজেদের শুধরে নেয়ার সুযোগ দেয়া উচিৎ বলে মনে করেছি। আমরা চাই সকলে মিলে একটি সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ব।"