নিজস্ব প্রতিবেদক:

শরীয়তপুরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এক অসহায় নারীর জমি দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মানের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী নুরুল হক খানের বিরুদ্ধে। এঘটনায় ভুক্তভোগী ওই নারী শরীয়তপুর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়া ওই জমিতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৪/১৪৫ ধারা জারি রয়েছে।

মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর পৌরসভার তুলাসার এলাকার ৭৯ নম্বর তুলাসার মৌজার বিআরএস ১৯৪৯ নম্বর খতিয়ানে ৬০ ও ৬১ নম্বর দাগে ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ জমির মালিক নাসিমা আক্তার (৩৩)। ছয় বছর আগে স্থানীয় এলিম তাকুদারের কাছ থেকে তিনি ওই জমি ক্রয় করে মিউটেশন করেন। শুধু তাই নয় মাটি ভরাট করে গাছপালা লাগিয়ে দখলে রয়েছেন। কিন্তু পৌরসভার চরপালং এলাকার ধনাঢ্য ব্যক্তি নুরুল হক খানের (নুরু খান) চোখ পরে ওই জমির ওপর। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন হওয়ার পর পরই অর্থের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে গত ১২ আগস্ট লোকজন নিয়ে জোরপূর্বক ওই জমি দখল করে ভবন নির্মাণ করার জন্য সীমানা প্রাচীর নির্মাণ শুরু করেন নুরুল হক। উপায়ন্তর না পেয়ে নাসিমা আক্তার ১৪ আগস্ট অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। পরে ওই জমিতে আদালত ফৌজদারি কার্যবিধি ১৪৪/১৪৫ ধারা জারি করেন। কিন্তু আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ চালিয়ে যাচ্ছেন নুরুল হক খান।

ভুক্তভোগী নাসিমা আক্তার বলেন, ক্রয় সূত্রে  ৭ দশমিক ৬০ শতাংশ জমির মালিক আমি। মিউটেশন করে ভোগদখলে আছি। নতুন সরকার আসার পর নুরুল হক খান ও তাঁর সন্ত্রাসী দলবল দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে আমার জমির গাছপালা কেটে দখল করেছে। আমি বাঁধা দিলে আমাকে মেরে ফেলার ভয় দেখাচ্ছে। আমি ও আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। তাই আমি আদালতে মামলা দায়ের করেছি। পরে আদালত নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তবুও আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জোরপূর্বক নুরুল হক খান ও তাঁর সন্ত্রাসী বাহিনী ভবন করার জন্য আমার জমিতে প্রাচীর নির্মাণ করছেন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

অভিযুক্ত নুরুল হক খানর (নুরু খান) বলেন, আমি আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যে আছি। আমি জমি ক্রয় করেছি জমির কাগজপত্রও আছে। কারো জমি আমি দখল করিনি। সঠিকভাবে জমি মাপা হোক। নাসিমা যদি এখানে জমি পায় তিনি নিয়ে যাবেন। আর আমারটা আমাকে বুঝিয়ে দেবেন। শরীয়তপুর শহরে আমার কম জায়গা না, যে তাঁর জমি আমার দখল করতে হবে। আমার যায়গার অভাব নাই। ২০১০ সালের পরে বাংলাদেশের মধ্যে রেমিট্যান্সে এক নাম্বারে আমি। আমার জায়গারতো টান পরেনি। আমি কেন ওনার জায়গা নিতে যাবো;

ভুক্তভোগী নাসিমা আক্তারের দায়েরকৃত মামলার আইনজীবী মো. সানাল মিয়া বলেন,  
মামলার বাদি নাসিমা ও বিবাদী নুরুল হক খান। মামলাটিতে আদালত আদেশ দিয়েছে ওই সম্পত্তিতে কোন প্রকার জমির আকার পরিবর্তন ও কোন ধরনের কাজ করা যাবে না। কোন পক্ষ ওই জমিতে কিছু করতে পারবে না। কেউ যদি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ব্যবস্থা নেবেন।

পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ওই জমিতে আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যিনি আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।