জাজিরায় পুত্রবধূ কর্তৃক বৃদ্ধা শাশুরিকে বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার(৭ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার হওয়া বৃদ্ধা উজালা বেগম(৬৫) জাজিরা উপজেলা মুলনা ইউনিয়নের মিরাশার এলাকার বাসিন্দা মজিবর বেপারীর স্ত্রী।
ভুক্তভোগীর পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আহত বৃদ্ধা উজালা বেগম ও মজিবর বেপারী দম্পতির এক ছেলে সন্তান। তাকে ৪ বছর আগে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা জামালপুর গ্রামের বাসিন্দা মনির হোসেনের মেয়ে তামান্না আক্তারের সাথে বিয়ে দেন। তাদের ঘরে চার বছরের একটি ছেলে ও নয় মাস বয়সী একটি মেয়ে আছে। উজালা বেগমের সাথে পুত্রবধূ তামান্না আক্তারের মাঝেমধ্যে বাচ্চাদের খাওয়ানো ও লালনপালনের বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা হতো। এছাড়া বড় কোন বিরোধ ছিলনা। উজালা বেগমের ছেলে হৃদয় বেপারী ঢাকায় একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে চাকরী করার সুবাদে ঢাকায় থাকেন। প্রতিদিনের মত শনিবার দিনগত রাতে নাতী ও পুত্রবধূর সাথে ঘুমাতে যান বৃদ্ধা উজালা বেগম। পরে রাতে বাচ্চাদের খাওয়ানো নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। রাত গভীর হলে বটি নিয়ে হঠাৎ উজালা বেগমের উপর হামলা করেন তার পুত্রবধূ তামান্না। পরে তিনি বাঁচার জন্য চিৎকার দিলে প্রতিবেশীরা আলাপ পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে তাকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। উজালা বেগমের মাথা ও হাতে কুপিয়ে জখম করা হয়।
আহত উজালা বেগমের জা মোমেনা বেগম বলেন, "রাত আড়াইটার দিকে হল্লাচিল্লা শুনে এসে দেখি আমার জা কে বটি দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। তাকে এমন নৃশংসভাবে জখম করার মত কোন আচরণ তিনি তার ছেলের বউয়ের সাথে করেননি। আমরা কখনোই বউয়ের সাথে কোন খারাপ ব্যবহার করতেও দেখিনি। এরপরও আমার জা কে এভাবে কুপিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা এর কঠিন বিচার চাই।"
প্রত্যক্ষদর্শী প্রতিবেশী মো: হুমায়ুন বলেন, "আমি রাত আড়াইটার দিকে ঘুমোতে যাওয়ার সময় একটি চিৎকার শুনি। পরে ঘরের বাইরে থেকে জানতে চাইলে কোন সারা না পেয়ে দরজার একটি ফাকা দিয়ে ভিতরে তাকিয়ে দেখি তাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে কিছু দিয়ে বেধে রাখা হয়েছে। পরে আশেপাশের লোকজন ডেকে দরজা ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে ঢুকে তাকে উদ্ধার করি।"
আহত হওয়া উজালা বেগমের ছেলে হৃদয় বেপারী বলেন, "আমি কাজের সুবাদে ঢাকায় থাকি। বাড়ীতে আমার মা, বাবা ও দুই সন্তানসহ স্ত্রী থাকে। আমার স্ত্রীর কোন মানসিক সমস্যা নেই। এছাড়াও আমার মায়ের সাথে তেমন কোন বিরোধ ছিলনা। এরপরও আমার স্ত্রী আমার মাকে যেভাবে কুপিয়ে জখম করেছে তা মেনে নেয়ার মত না। আমার মা অল্পের জন্য বেঁচে গেছেন। ডাক্তাররা জানিয়েছেন এখন শঙ্কামুক্ত আছেন। এই বিষয়ে আমার শশুর বাড়ীতে জানিয়েছি। তারা আসলে তাদের সাথে কথা বলে পরবর্তি সিদ্ধান্ত নেবো।"
অভিযুক্ত তামান্না আক্তারের কাছে হামলার কারন জানতে চাইলে তিনি কোন কথা বলেননি।
এবিষয়ে জাজিরা থানা পুলিশের পরিদর্শক(তদন্ত) সুজন হক বলেন, "ঘটনার বিষয়ে জেনেছি। হামলাকারী নারীকে তার পরিবারের জিম্মায় রাখা হয়েছে। এখনো কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
Post a Comment
Thnaks For Comment