শরীয়তপুর টাইমস্ ডেস্ক :
শরীয়তপুরে অসচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী করতে আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সহায়তায় ৩০ জন নারীর মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে।
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর দুইটার সময় জেলা আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে তাদের হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি জেলা কমান্ড্যান্ট জাহাঙ্গীর আলম এসময় সেলাই মেশিন পেয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন এসব অসচ্ছল নারীরা।
অনুষ্ঠানে জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী জানায়, জেলার বেকার নারীদের কর্মসংস্থান ও স্বাবলম্বী করতে বিভিন্ন উপজেলা থেকে ৩০ জন নারীকে ৭৫ দিনের সেলাই ও ফ্যাশন ডিজাইনের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে এসব নারীদের মধ্যে একটি করে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়।
নাড়িয়া উপজেলার নশাসন এলাকা থেকে সেলাই মেশিন নিতে এসেছেন হাবিবা আক্তার নামের এক কলেজ শিক্ষার্থী। হাবিবা আক্তারের সাথে কথা হলে তিনি জানায়, তার বাবা দুলাল সরদার পাঁচ বছর আগে মারা যায়। তার বড় ভাইয়ের সাথে পরিবারের কোন যোগাযোগ নেই। ৩ বোনের মধ্যে হাবিাব সেজো। মা তাসলিমা বেগম অন্যের বাসা-বাড়িতে কাজ করে সামান্য উপার্জনের টাকা দিয়ে চালিয়ে আসছেন দাদি, বড় ভাইয়ের স্ত্রী ও তার মেয়েসহ ছয় সদস্যের পরিবার। অর্থের অভাবে হাবিবার পড়াশোনা প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম। এসময় তিনি জানতে পারেন আনসার বাহিনীর প্রশিক্ষণের কথা। পরে ৭৫ দিন প্রশিক্ষণ শেষে একটি সেলাই মেশিন পেয়ে অর্থকষ্ট থেকে মুক্তির বার্তা খুঁজে পেয়েছেন তিনি।
এসময় হাবিবা আক্তার বলেন, গরীব পরিবারের সন্তান হওয়ার আমাদের সংসারে টানাপোড়নে চলতে হয়। মায়ের একার পক্ষে পরিবারের এতোগুলো লোকের খাবার আর পড়াশোনার খরচ যোগাতে ভীষণ কষ্ট হচ্ছিলো। এই অবস্থায় আমার পড়াশোনা চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছিলো। আমি আজ আনসার বাহিনী থেকে সেলাই প্রশিক্ষণ শেষ করে একটি সেলাই মেশিন পেলাম। এখন সেলাইয়ের কাজ করে মাকে সাহায্য করার পাশাপাশি নিজের পড়াশোনার খরচ নিজেই চালিয়ে নিতে পারবো। আমি আনসার বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই।
শরীয়তপুর আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ড্যান্ট জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা আনসার বাহিনী আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি বিভিন্ন আর্ত সামাজিক উন্নয়নে কাজ করে থাকি। আমরা বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জেলার বেকার মেয়েদের স্বাবলম্বী করার চেষ্টা করি। এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা নিজেদের গড়ে তোলার পাশাপাশি পরিবারকে সাহায্য করতে পারবে। সেই ধারাবাহিকতায় আজ ৩০ জন নারীর মধ্যে সেলাই মেশিন বিতরণ করা হয়েছে। এসকল নারীরা এখন মেশিন চালিয়ে আয় করে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
Post a Comment
Thnaks For Comment