শরীয়তপুর টাইমস্ ডেস্ক:
পাকিস্তানের মাটিতে ইতিহাস তো বটেই, এর আগে ঘরের মাঠে কিংবা কোথাও তাদের বিপক্ষে টেস্ট ম্যাচে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। এবার সিরিজের দুটি ম্যাচেই জিতে স্বাগতিকদের হোয়াইটওয়াশ করার ইতিহাস গড়ল নাজমুল হোসেন শান্ত’র দল। যেকোনো বিচারে হয়তো এটাই টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অর্জন। দুর্দান্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্যে এই সিরিজে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
যেকোনো ক্রিকেটারের জন্যই সিরিজসেরা হওয়ার অনুভূতি অন্যরকম। তবে সেই মুহূর্তে মেহেদী মিরাজ স্মরণ করলেন অন্য এক বিজয়ীকে। যিনি বাংলাদেশে হওয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে নিহত হয়েছিলেন। যে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশে ক্ষমতার পালাবদলও হয়ে গেছে। তার আগেই আন্দোলনের সময় নিহত হন এক রিকশাচালক। সিরিজসেরা হয়ে পুরস্কারের অর্থ তার পরিবারকে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মিরাজ।
সিরিজের দুই টেস্টে সবমিলিয়ে ১৫৫ রান করেছেন ২৬ বছর বয়সী এই তারকা। একইসঙ্গে তিনি বল হাতে নিয়েছেন ১০ উইকেট। প্রথম টেস্টে বাংলাদেশ জয় পায় ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে। সেই জয়ে বড় অবদান রেখে মিরাজ দ্বিতীয় ইনিংসে নিয়েছিলেন ৪ উইকেট। দ্বিতীয় টেস্টে বল-ব্যাট উভয় হাতেই ত্রাতার ভূমিকা নেন তিনি। প্রথম ইনিংসে তিনি শিকার করেন ৫ উইকেট, এরপর ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ যখন মাত্র ২৬ রানেই ৬ উইকেট হারিয়ে বসে, তখন লিটন দাসের সঙ্গে ১৬৫ রানের রেকর্ডগড়া জুটি গড়েন।
সেই জুটিই বাংলাদেশকে বিপর্যয় থেকে টেনে তোলে। দ্বিতীয় টেস্টে বাংলাদেশের ৬ উইকেটে জয়েও তার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। লিটন ১৩৪ রানের অনবদ্য ইনিংস তো খেলেছেনেই, তাকে সঙ্গ দেওয়া মিরাজও করেন ৭৮ রান।
পরে সিরিজসেরার পুরস্কার জিতে মিরাজ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘আমি সত্যিই খুব খুশি, প্রথমবার দেশের বাইরের সিরিজে এই পুরস্কার পেলাম। অলরাউন্ডার হিসেবে খেলা অনেক কঠিন কাজ, আমি শুধুমাত্র স্ট্রাইক বাড়াতে চেয়েছি এবং মুশি (মুশফিকুর রহিম) ও লিটন দাসের সঙ্গে ব্যাটিংটা উপভোগ করেছি। পাঁচ উইকেট পেয়ে অবশ্যই আনন্দিত, তবে এরচেয়েও ভালো করার চেষ্টা ছিল। আমি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলিনি, ফলে ঘরে কাটানোর মতো কিছু সময় পেয়েছি এবং ওই সময়েও আমার প্রতি ম্যানেজমেন্টের প্রচেষ্টার জন্য অবশ্যই কৃতজ্ঞতা।’
সিরিজসেরা হয়ে টাইগার এই অলরাউন্ডার ৫ লাখ পাকিস্তানি রুপি অর্থ পুরস্কার পেয়েছেন। সেই অর্থ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত রিকশাচালকের পরিবারকে দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে মিরাজ বলেন, ‘ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে এক রিকশাচালক আহত হয়েছিলেন, পরে তিনি মারা যান। পুরস্কার হিসেবে পাওয়া অর্থ তার পরিবারকে দেবো।’
Post a Comment
Thnaks For Comment