শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ন
মেহেদী হাসান ॥ শরীয়তপুর সদর উপজেলার তালুকদার ব্রিক ফিল্ড নামে একটি ইট ভাঁটায় শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করার অভিযোগ ওঠেছে। ওই শ্রমিকের নাম আলমগীর হোসেন মিয়া (৩৫)। সে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার এলানজুরি গ্রামের জামির হোসেন মিয়ার ছেলে। সোমবার দুপুরে কযেকজন শ্রমিক আলমগীর হোসেনকে পিটিয়ে আহত করে। সংবাদ পেয়ে স্বজনরা উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। মঙ্গলবার ভোরে সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে মারা যায়। পুলিশ হত্যার অভিযোগে ওই ইট ভাঁটায় কর্মরত চার শ্রমিককে আটক করেছে। আলমগীরের মা আনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে আট ব্যক্তিকে আসামী করে মঙ্গলবার শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
পালং মডেল থানা সূত্র জানায়, শরীয়তপুর সদরের খিলগাঁও গ্রামে তালুকদার ব্রিক ফিল্ড অবস্থিত। ওই ইট ভাঁটায় কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা, করিমগঞ্জ ও সদর উপজেলার শ্রমিকরা কাজ করেন। আলমগীর হোসেন তার পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজন মিলে ১৫ জনের একটি দল নিয়ে গত নবেম্বরে ওই ইট ভাঁটায় কাজে যোগদান করেন। সোমবার সকালে আলমগীরের একটি মুঠোফোন সেট হারিয়ে যায়। ওই ঘটনা নিয়ে শ্রমিক জাকির হোসেন ভূইয়া, ওবায়দুল খান, আল আমীন ভূইয়া ও বাবুল হোসেন ভূইয়ার সাথে কথা কাটাকাটি হয়। তখন ওই ব্যক্তিরা আলমীর ও তার ছোট ভাই বাবু হোসেন মিয়াকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। স্বজনরা তাদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। মঙ্গলবার ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলমগীর হোসেন মারা যায়। মঙ্গলবার দুপুরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের সদস্যরা লাশ নিয়ে কিশেরগঞ্জে রওনা দেয়। পুলিশ হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে চার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন ওই ইট ভাঁটায় কর্মরত কিশোরগঞ্জ সদরের বাসিন্দ জাকির হোসেন ভূইয়া, বাবুল হোসেন ভূইয়া, আল আমীন ভূইয়া ও কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জের বাসিন্দা ওবায়দুল খান।
নিহত আলমগীরের মা আনোয়ারা বেগম বলেন, জাকির হোসেন ভূইয়া, ওবায়দুল খান, আল আমীন ভূইয়া ও বাবুল হোসেন ভূইয়ার নেতৃত্বে ৮-১০ জন ব্যক্তি পিটিয়ে আমার ছেলেকে হত্যা করেছে। তারা প্রায়ই ইট ভাঁটার শ্রমিকদের টাকা ও মোবাইল ফোন সেট চুরি করে। ওই দিন আমার ছেলের মোবাইলটাও চুরি করেছে। বিষয়টি নিয়ে তাদের সাথে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে তারা আমার ছেলেকে হত্যা করে। আমি হত্যাকারিদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। তালুকদার ব্রিক ফিল্ডের মালিক ফারুক আহম্মেদ তালুকদার বলেন, মোবাইল ফোন সেট চুরির ঘটনা নিয়ে শ্রমিকরা মারা মারি করার কারণে এক শ্রমিক মারা গেছে। ঘটনাটি নিয়ে থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। ওই শ্রমিকের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা করা হবে। পালং মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবীর বলেন, শ্রমিককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতের সোপর্দ করা হবে। বাকি চার আসামী পালিয়ে গেছে, তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply